Tuesday, May 29, 2018

সিদ্ধান্ত



জীবনবাবু বাড়িতে পা রাখতেই ছোট ভাইয়ের প্রশ্ন 'এত রোদে কোথায় গেছিলে?' উত্তর না দিয়ে কিছুটা না শোনার মতো করে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে ভাইপোর মুখোমুখি হন, সে যথারীতি পাশ কাটিয়ে চলে যায়। ধুঁকতে ধুঁকতে ঘরে ঢুকতেই বিছানায় শুয়ে থাকা স্ত্রী প্রশ্ন করে 'ওষুধটা পেলে??'..... কোনোরকমে 'হ্যাঁ' বলে নিজের চেয়ারে বসেন।'বাবুর মানি অর্ডার টা করে এলাম, তোমার বালিশের পাশে মোবাইল টা আছে জানিয়ে দিও'।


দশ মিনিট বাদে নীচে থেকে তীক্ষ্ণ গলায় ডাক আসে 'খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে,নেমে আসুন'।শাক,টকডাল, ঝিঙে আলুর তরকারি গলধঃকরণ করে নিজ ঘরে একগুচ্ছ খামে নাম লিখতে লিখতে দুপুর কেটে যায়। বিকেলে বাড়ির সদস্য যথা ভাই,ভাতৃবধূ, ভাইপোকে উপস্থিত থাকতে বলেন তার অবসর সময় কাটানোর ছোট্টো সিঁড়ির নিচে ঘরটিতে।সবাই হাজির হলে একটি সাদা খাম ভাইয়ের হাতে তুলে বলেন অবশ্যই 'উপস্থিত থেকো।' খামের ভেতর নিমন্ত্রণ পত্র খুলে পড়তেই তিনি বিষ্ময় ও বিরক্তি চোখে দাদার দিকে তাকান। জীবনবাবু অত‍্যন্ত কোমলভাবে বলেন 'তোমরা তো জানো ই ডাক্তার তোমাদের শ্রদ্ধেয়া বৌদির ব্যপারে জবাব দিয়ে দিয়েছে। আর খুব বেশি হলে পাঁচ মাস, তারপর তোমাদের একটা বড় মাপের খরচ আছে।' ভাতৃবধূ ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে 'কী বলতে চান পরিস্কার করে বলুন'। তিনি এবার ষ্পষ্ট ভাবে বলেন' বিমলার মৃত্যুর পর কয়েকদিন তথাকথিত নিয়ম পালন করে শ্রাদ্ধ নামক যে প্রীতিভোজের আয়োজন আমায় করতে হবে তোমরা সকলেই সেখানে উপস্থিত থাকবে এই বিশ্বাস আমার আছে, তাই সেই ভোজের আয়োজন আমি আগামী সপ্তাহে ই রেখেছি, এবং এই অনুষ্ঠানের মেনুতে বিমলার পছন্দের প্রতিটি পদ আছে, তার উদ্দেশ্যেই যে এত উদযাপন অন্ততঃ জীবৎকালে সে একবার চাক্ষুষ করুক। মৃত্যুর আগে একশো টাকার মালা না জুটুক পাঁচশ টাকার খাবার তো পাবে। সবার প্রথমে তোমাদের দিয়ে ই শুরু করলাম, কোনো উপহার না এনে একটু শ্রদ্ধা ভক্তি নিয়ে উপস্থিত থেকো, বেঁচে থেকে দেখে যাক্, ফটো ফ্রেম থেকে দেখতে পাওয়া যায় কিনা কেউ তো জানেনা।'

Thursday, May 10, 2018

বন্ধু


কিরে বন্ধু হলো কেউ???

পাঁচ বছরের 'মিতালী'কে মা প্রশ্ন করেছিল স্কুলের দ্বিতীয় দিনে, ছোট্টো মাথা উত্তর খুঁজে পায়নি সেদিন। তবে দিদিমণির ভয়ে যেদিন স্কার্ট ভিজে গেছিল, সবাই হাঁসলেও একটা ছোট্ট হাত তার ছলছলে চোখ মুছিয়ে বন্ধুত্বের বীজ বপন করে দেয়। তাই মা কে 'প্রথমা'র নাম বলতে ভোলেনি সে।

 হাইস্কুলে তিনটি ক্লাস একসাথে পেরিয়ে অষ্টম এ এসে অন্য বিভাগ 'মনোপ্রিয়া'র থেকে আলাদা করে বন্ধু বিচ্ছেদের ব্যথা অনুভব করিয়েছিল তাকে। বাড়িতে এসে বাবার পিঠে মাথা রেখে কেঁদেছিল অবোধ শিশুর মতো। স্কুলের ছোট গন্ডী পেরিয়ে কলেজের আচমকা বেড়ে ওঠার চমক্ চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। পরীক্ষায় টুকলি উপহার দিয়ে 'অনন্ত' তার মনের মণিকোঠায় স্থান পায়। তারপর সকলের কৌতুহল ও প্রশ্নে সে প্রেমিক জাতীয় পুরুষ হয়ে ওঠে। শেষ দিন প্রতিশ্রুতি পেয়ে বন্ধুত্বের চরমতম আহ্লাদে ভাইয়া কে মন উজাড় করে বলে।

 বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট প্রাঙ্গণে সেই প্রতিশ্রুতি শত মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায়। এখন বেশ কয়েকজন নিয়ে গ্ৰ্যুপ তৈরি হলেও কে কতটা কাছে আর কে দূরে ধন্দ লাগে, বাবার গলায় ছোটবেলায় শোনা গান ভেসে ওঠে' জীবন পুরের পথিক রে ভাই.. কোনো দেশে শাকিন নাই... কোথাও আমার মনের খবর পেলাম না'।

বিয়ের দশম বছরে স্বামীর কাছে পাওয়া হার, ছেলের হামী,মা বাবা শ্বশুর শ্বাশুড়ির থেকে পাওয়া ভালবাসায় বন্ধুত্বের নতুন দিশা খুঁজে পায় সে।এরাও তো ছিল পাশেই,বুঝিনি কেবল মাত্র।বন্ধুত্বের তো কোনো নাম নেই, পরিধি নেই, পরিধান হয়না,বয়স ও সময়ের মাপকাঠি থাকেনা।এক কথায় বলা যায় বন্ধু মানে 'আত্মতুষ্টির নিমিত্ত মাত্র' বা ' আমার আমিত্বের আংশিক প্রতিচ্ছবি'।


বৃহন্নলা


ওরা কারা?নারীর মতো সুন্দরী, নমনীয় না, আবার পুরুষের মতো বলিষ্ঠ, সমাজের রক্ষাকর্তা না, তবুও ওরা জন্মায় কারুর ঘরে অনেক শুভকামনা ও মনোষ্কামনার পর।সবার ঘেন্নায়,মা বাবার লোকলজ্জায় একদিন ঠাঁই হয় ওদের বিশেষ জায়গায়। একদিন ওরা বুঝতে পারে, ওরা মানুষরূপী অন‍্য জীব। নাহলে ওদের সব ভাই বোন, পাড়ার বাচ্চা গুলো তো বেশ মা এর আদরে, বাবার যত্নে বড় হচ্ছে, শুধু তাই কেন বিল্টুদের কুকুর টা এমনকি মামারবাড়ীর কাকাতুয়া টাও তো বাড়ির সদস্য দের সাথেই আছে, নেই শুধু ওরা, ওদের আছে ঘরের বাইরে আলাদা খাঁচা, যেখানে সমাজের মানুষ তথা নারী ও পুরুষ যায়না। কিছুদিনের মধ্যে ওদের এটাও বোঝানো হয় পেট চালাতে হলে রাস্তায় নামতে হবে, কখনো গালিগালাজ করে কোলের ছেলে নাচিয়ে, কোথাও ট্রাফিক সিগন্যাল এ তালি বাজিয়ে ভিক্ষা চেয়ে,আর রাতে নারী শরীর না পেয়েও কামনার বস্তু হয়ে উঠতে। হ্যাঁ ওদের শেখানো হয়েছে, এমন কাজ ই বেছে নিতে যেখানে সম্মান, ভালোবাসা, পরিচিতি চাই না, বরং ভয় দেখিয়ে, হাঁসির খোরক হয়েই রোজগার করা যায়। কারণ ওরা মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি, হয়ে উঠেছে ভিন্ন এক জীব।


Wednesday, May 9, 2018

The Homemakers


One of my dear friends suggested me to write on "housewives" who are usually presumed as 'good for nothing'.
True or False that's I leave upto you...Please comments what do you feel.
Housewives are not engaged in any work/job which are monetarily beneficial.So,simply they are categorised as a type of people who are taken for granted no matter what they go through from day to night.
They wake up at 6 or maybe 7 o'clock & get busy with making breakfast for all members of the house.Someone is asking for tea, other two are seeking for juice,oh the little one is crying for milk, come-on hurry up.. what are you doing?
After finishing the breakfast stuff you must have a list of lunch menu, knowing everyone's preferences and health issues quickly figure out the menu, after a few brainstorm you are prepared to do two veggies and fish but suddenly you realize that nothing is their in your refrigerator except eggplant and beans,now that's how your exam starts.The clock is ticking faster than your single breathe, immediately you amend your menu to fit in the available vegetables in your menu & start your cooking.
KNOCK...KNOCK...KNOCK...
HELL...
Who is at the door to make your life little more miserable at this time? Hmm.... forgot to pay the paper bill, remember no one is going to remind you.Well the lunch menu is ready,now what ?
Only fifteen minutes left for his school bus still the dresses are not pressed,why his father is shouting from bathroom, have I missed anything?
Oh yes!! I mean oh no...he needs hot water..... Alright by the time you finished all your household chores i.e. around 11.30 have the breakfast which is putrid but I guess something is undone still,.... what??...God... you should go for flowers and sweet , it's Thursday! Now it's 1.30pm and as because you have nothing to do you can watch TV but remember you don't need any relaxation but getting privilege to have your own time.
Its 3 o'clock and the little guy is coming so be ready to clean him up from top to toe, prepare a delicious dish what he didn't for last few days or a week.Is he ready for swimming? Make sure because you are already late and also you have nothing to do.While coming from swimming session bring some vegetables and groceries, but look at the time, he might be waiting for you at the doorstep after a hectic schedule. Step in to your house to get yourself busy with tea and evening snacks.
Home Work Time & someone is asking for help for his history and english homework.At the same time husband is expecting her wife to spend some quality time.
KNOCK...KNOCK...KNOCK...
In the meantime Mr and Mrs Sanyal at the door to rejoice your mood and as because you have nothing to do, so it's quite enjoyable of having them for two hours,now it's 9 pm and what's in dinner?
Well again something healthy tasty, the ingredients must be stored in kitchen and most importantly not anything what made in last two days.Finally at 11 o'clock finishing all the stuff, you have a silent bed who never blame you that you have nothing to do, because she understands that 'you are good for nothing because always ready for anything and everything'.

Tuesday, May 8, 2018

আমি খুব খারাপ না রে



আমি খুব খারাপ না রে

গ্রীষ্মের পরন্ত বিকেল, সূর্যের দাবদাহে মাঠে নেমেছে শুষ্কতা, দুজনের দূরত্ব গুমোট ভাবটা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কয়েকজন জনের পায়ের শব্দ শোনা গেলেও তাদের শব্দের বড়ো অভাব আজ। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে.....

আরশি: কিছু বলার নেই তোমার, অনেক মিথ্যে বলে এসেছি আজ.....


প্রলয়: কি???


আরশি: না যদি নতুন কিছু বলার থাকে,জানি নেই, তবু শেষ বারের মতো....


প্রলয়: না........... বিশ্বাস কর ঠকাতে চাই নি কখনো তোকে, কিন্তু.. মানে... বোঝার চেষ্টা কর..


আরশি:
বুঝেছি গো... সেই যে একবার হাত ধরে মিথ্যে বলেছিলে ' তোকে ভালবাসি রে', তারপর চার বছর পেরিয়ে গেল,ঐ কথা টা শোনার অপেক্ষায়.... মনে আছে যেদিন ভ্রমরের সাথে ঝগড়া করে আমার কাছে খুব কেঁদেছিলে সেদিন ভেবেছিলাম এবার বুঝি বলবে ' তোকে.....


প্রলয়: বিয়েতে আমায় ডাকবি না? 


আরশি:
বলবো..... এসোনা কিন্তু...


প্রলয়: আচ্ছা, আমি খুব খারাপ না রে?


আরশি :
........... তোমাদের বিয়ের দিন ভ্রমর কে বলো লাল বেনারসি পড়তে, তোমার পছন্দের রং...


প্রলয় : তোকেও ওই রং মানায় রে ...


আরশি:
সত্যি করে বলবে আমাকে কি ঐ লাল রং এ একদম মানাতো না? যদি তোমার জন্য পড়তাম জড়ি লাগানো পাড়ে..... তাহলে বলতে আবার ' তোকে ভালবাসি রে'।



0818